জাপান টুরিস্ট ভিসা খরচ ২০২৬ বিষয়ে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের মধ্যে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
জাপান একটি উন্নত, নিরাপদ ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ হওয়ায় প্রতি বছর হাজারো মানুষ ঘুরতে যেতে চান।
২০২৬ সালে জাপান টুরিস্ট ভিসার খরচ, আবেদন পদ্ধতি, ক্যাটাগরি ও প্রসেসিং সম্পর্কে সঠিক ও হালনাগাদ তথ্য জানা থাকলে ভিসা পাওয়া অনেক সহজ হয়।
এই আর্টিকেলে জাপান টুরিস্ট ভিসা সংক্রান্ত সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে নতুন ও অভিজ্ঞ উভয় ভ্রমণকারীরাই উপকৃত হন।
জাপান টুরিস্ট কি?
জাপান টুরিস্ট ভিসা মূলত স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের জন্য প্রদান করা হয়। যারা জাপানে ভ্রমণ, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখা অথবা স্বল্পমেয়াদি ব্যক্তিগত কাজে যেতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা প্রযোজ্য।
জাপান টুরিস্ট ভিসা সাধারণত ১৫ দিন, ৩০ দিন অথবা সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত থাকার অনুমতি দেয়।
এই ভিসার মাধ্যমে কেউ জাপানে গিয়ে চাকরি করতে বা দীর্ঘমেয়াদি পড়াশোনা করতে পারবেন না। টুরিস্ট ভিসা শুধুমাত্র ভ্রমণ ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ।
আবেদনকারীর আর্থিক সক্ষমতা, ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও বাংলাদেশে ফেরার দৃঢ়তা প্রমাণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| ভিসার ধরন | টুরিস্ট (স্বল্পমেয়াদি) |
| সর্বোচ্চ মেয়াদ | ৯০ দিন |
| কাজের অনুমতি | নেই |
| উদ্দেশ্য | ভ্রমণ, পরিবার ভিজিট |
জাপান টুরিস্ট ভিসা খরচ
২০২৬ সালে জাপান টুরিস্ট ভিসা খরচ নির্ভর করে ভিসার ক্যাটাগরি ও এন্ট্রির সংখ্যার ওপর।
সাধারণত জাপান দূতাবাসের নির্ধারিত ভিসা ফি তুলনামূলকভাবে কম, তবে ভিএফএস বা সার্ভিস সেন্টারের চার্জ যোগ হওয়ায় মোট খরচ কিছুটা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারীদের জন্য একবার প্রবেশযোগ্য (Single Entry) ভিসার খরচ কম, আর একাধিকবার প্রবেশযোগ্য (Multiple Entry) ভিসার খরচ তুলনামূলক বেশি।
এছাড়া ডকুমেন্ট ট্রান্সলেশন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রস্তুত ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আলাদাভাবে যোগ হতে পারে।
| খরচের ধরন | বিস্তারিত | টাকার পরিমাণ (BDT) |
|---|---|---|
| সরকারি ভিসা ফি | জাপান সরকার বাংলাদেশিদের জন্য নেয় না | ০ টাকা |
| VFS Global সার্ভিস চার্জ | বাধ্যতামূলক (আবেদন জমা দেওয়ার সময়) | ১,৯০০ টাকা (প্রায়) |
| কুরিয়ার / SMS সার্ভিস (ঐচ্ছিক) | নিলে অতিরিক্ত যোগ হয় | ৩০০ – ৮০০ টাকা |
| ডকুমেন্ট অনুবাদ / ফটোকপি | প্রয়োজন হলে | ৫০০ – ১,৫০০ টাকা |
| ট্রাভেল এজেন্সি সার্ভিস চার্জ | নিজে না করে এজেন্সি নিলে | ২,০০০ – ৫,০০০+ টাকা |
| নিজে করলে মোট খরচ | ভিসা ফি + VFS | ≈ ১,৯০০ – ২,৫০০ টাকা |
| এজেন্সি দিয়ে করলে মোট খরচ | সব মিলিয়ে | ≈ ৪,০০০ – ৭,০০০+ টাকা |
জাপান ভিসা টুরিস্ট আবেদন
নিচে জাপান ভিসা টুরিস্ট আবেদন করার স্টেপ বাই স্টেপ গাইড দেওয়া হলো, যেখানে প্রতিটি ধাপে অফিশিয়াল ও দরকারি লিংক যুক্ত আছে।
আপনি এটি সরাসরি আপনার আর্টিকেলে ব্যবহার করতে পারবেন। আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ ও সত্য তথ্য প্রদান অত্যন্ত জরুরি।
জাপান ভিসা টুরিস্ট আবেদন – স্টেপ বাই স্টেপ
জাপান টুরিস্ট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সরল। প্রথমে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হয়, এরপর নির্ধারিত ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা দিতে হয়।
স্টেপ ১: জাপান টুরিস্ট ভিসার যোগ্যতা যাচাই
প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি জাপান টুরিস্ট ভিসার জন্য যোগ্য কিনা। এই ভিসা শুধুমাত্র ভ্রমণ, পরিবার বা বন্ধু ভিজিট, কিংবা ব্যক্তিগত স্বল্পমেয়াদি সফরের জন্য।
🔗 অফিসিয়াল গাইডলাইন:
https://www.bd.emb-japan.go.jp/itpr_en/visa.html
স্টেপ ২: জাপান টুরিস্ট ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড
জাপান দূতাবাসের নির্ধারিত আবেদন ফরম ডাউনলোড করে ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে।
🔗 আবেদন ফরম (PDF):
https://www.mofa.go.jp/files/000124525.pdf
স্টেপ ৩: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা
সাধারণত নিচের কাগজগুলো প্রয়োজন হয়:
- বৈধ পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ভিসা আবেদন ফরম
- ভ্রমণ পরিকল্পনা (Itinerary)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (৬ মাস)
- চাকরি বা ব্যবসার প্রমাণপত্র
🔗 ডকুমেন্ট লিস্ট (বাংলাদেশ):
https://www.bd.emb-japan.go.jp/itpr_en/visa_tourist.html
স্টেপ ৪: VFS Global এ অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
বাংলাদেশ থেকে জাপান টুরিস্ট ভিসার আবেদন VFS Global এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
🔗 VFS Global Japan (Bangladesh):
https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/jpn/
স্টেপ ৫: VFS সেন্টারে আবেদন জমা
নির্ধারিত দিনে VFS সেন্টারে গিয়ে:
- ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে
- বায়োমেট্রিক (যদি প্রযোজ্য হয়)
- VFS সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করতে হবে
📌 সরকারি ভিসা ফি: ০ টাকা
📌 VFS সার্ভিস চার্জ: প্রায় ১,৯০০ টাকা
স্টেপ ৬: ভিসা প্রসেসিং ও স্ট্যাটাস ট্র্যাক
আবেদন জমা দেওয়ার পর ভিসা প্রসেসিং শুরু হয়। অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করা যায়।
🔗 ভিসা ট্র্যাকিং:
https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/jpn/track-application
স্টেপ ৭: পাসপোর্ট সংগ্রহ
ভিসা সিদ্ধান্ত হলে SMS বা ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হয়। এরপর VFS সেন্টার থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হয় অথবা কুরিয়ারে গ্রহণ করা যায়।
স্টেপ ৮: ভিসা যাচাই করে ভ্রমণ প্রস্তুতি
পাসপোর্টে ভিসা স্টিকার যাচাই করে ভ্রমণের তারিখ, টিকিট ও হোটেল বুকিং নিশ্চিত করুন।
🔗 জাপান ট্রাভেল অফিসিয়াল গাইড:
https://www.japan.travel/en/
জাপান ভিসা টুরিস্ট আবেদন সংক্ষেপ
| ধাপ | কী করতে হবে | লিংক |
|---|---|---|
| ১ | যোগ্যতা যাচাই | bd.emb-japan.go.jp |
| ২ | আবেদন ফরম | mofa.go.jp |
| ৩ | ডকুমেন্ট প্রস্তুত | bd.emb-japan.go.jp |
| ৪ | VFS অ্যাপয়েন্টমেন্ট | vfsglobal.com |
| ৫ | আবেদন জমা | VFS অফিস |
| ৬ | ট্র্যাকিং | vfsglobal.com |
| ৭ | পাসপোর্ট সংগ্রহ | VFS |
জাপান টুরিস্ট ভিসা ক্যাটাগরি
জাপান টুরিস্ট ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে, যেমন সিঙ্গেল এন্ট্রি ও মাল্টিপল এন্ট্রি। ভ্রমণের সংখ্যা ও উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়।
| ক্যাটাগরি | বিবরণ |
| সিঙ্গেল এন্ট্রি | একবার প্রবেশ |
| মাল্টিপল এন্ট্রি | একাধিক প্রবেশ |
জাপান ভিসা প্রসেসিং
জাপান ভিসা প্রসেসিং সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়।
- আবেদন গ্রহণ
- ডকুমেন্ট যাচাই
- দূতাবাসে পাঠানো
- সিদ্ধান্ত প্রদান
জাপান ৩ মাসের ট্যুরিস্ট ভিসার দাম কত?
৩ মাসের জাপান টুরিস্ট ভিসা মূলত স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের সর্বোচ্চ সীমা।
এর খরচ নির্ভর করে সিঙ্গেল বা মাল্টিপল এন্ট্রির ওপর। সাধারণত এই ভিসার জন্য আবেদনকারীর আর্থিক সক্ষমতা বেশি গুরুত্ব পায়।
| মেয়াদ | আনুমানিক খরচ |
| ৯০ দিন | নির্ধারিত |
জাপান টুরিস্ট ভিসা খরচ: প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত ঘন্টা সময় লাগে?
উত্তর: সাধারণত ৮ থেকে ১২ ঘন্টা সময় লাগে, ফ্লাইট রুটের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন: ৩ মাসের ট্যুরিস্ট ভিসার দাম কত?
উত্তর: ভিসা টাইপ অনুযায়ী নির্ধারিত ফি প্রযোজ্য।
প্রশ্ন: জাপান ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের কত ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগে?
উত্তর: সাধারণত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হয়।
প্রশ্ন: জাপানের কাজের বেতন কত?
উত্তর: কাজের ধরন অনুযায়ী বেতন ভিন্ন হয় এবং টুরিস্ট ভিসায় কাজের অনুমতি নেই।
উপসংহার
সবশেষে বলা যায়, জাপান টুরিস্ট ভিসা খরচ ২০২৬ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকলে ভিসা আবেদন অনেক সহজ হয়।
সঠিক ডকুমেন্ট, পর্যাপ্ত ব্যাংক ব্যালেন্স ও নির্ভরযোগ্য তথ্য উপস্থাপন করলে জাপান ভ্রমণের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।

