বিদেশ ভ্রমণ, পড়াশোনা বা কাজের জন্য প্রথম ধাপ হলো ভিসা পাওয়া। কিন্তু অনেকেরই প্রথম প্রশ্ন থাকে – কোন দেশের ভিসার দাম কত? ভিসা ফি নির্ভর করে দেশের নীতি, ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও ভিসার ধরন অনুযায়ী।
কেউ ইউরোপে ট্যুরে যেতে চান, কেউ আবার সৌদি আরব বা মালয়েশিয়ায় চাকরির উদ্দেশ্যে – প্রতিটি ক্ষেত্রেই খরচ ও প্রক্রিয়া ভিন্ন।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানবো বাংলাদেশ থেকে কোন দেশের ভিসা করতে কত টাকা লাগে ২০২৫ সালে, কোন দেশগুলো ভিসা ফ্রি, এবং বাংলাদেশের ভিসার দাম কত – সব কিছু একসাথে একটি গাইডে।
কোন দেশের ভিসার দাম কত
বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই তাদের নিজস্ব ভিসা প্রক্রিয়া ও খরচ নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার অনেক দেশই ভিসা দিয়ে থাকে, তবে এর খরচ ও সময়সীমা আলাদা।
- ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে (শেনজেন) সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসার ফি ৮০ ইউরো।
- আমেরিকার জন্য B1/B2 ভিসার ফি ১৮৫ মার্কিন ডলার।
- কানাডা ভিসা আবেদন করতে প্রায় ১০০ কানাডিয়ান ডলার লাগে।
- সৌদি আরবে চাকরির ভিসা করতে খরচ পড়ে প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা (সর্বমোট এজেন্সি খরচসহ)।
- মালয়েশিয়া, দুবাই, কুয়েত, কাতার, ওমান – এসব দেশে কর্মসংস্থানের ভিসার খরচ প্রায় ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।
নিচের টেবিলে বিভিন্ন দেশের ভিসা ফি সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো: বিভিন্ন দেশের ভিসার খরচ – ২০২৫ সালের জন্য
দেশ | ভিসার ধরন | ভিসা ফি (প্রায়) | মন্তব্য |
---|---|---|---|
যুক্তরাষ্ট্র (USA) | ট্যুরিস্ট (B1/B2) | $185 ≈ 21,000 টাকা | অনলাইনে DS-160 ফর্ম লাগে |
কানাডা | ভিজিটর | CAD 100 ≈ 8,500 টাকা | বায়োমেট্রিক আলাদা ফি প্রযোজ্য |
যুক্তরাজ্য (UK) | স্ট্যান্ডার্ড ভিজিট | £115 ≈ 16,000 টাকা | ৬ মাস মেয়াদ |
অস্ট্রেলিয়া | ট্যুরিস্ট | AUD 150 ≈ 11,000 টাকা | ETA অনলাইনে |
সৌদি আরব | ওয়ার্ক ভিসা | ৩-৪ লক্ষ টাকা | এজেন্সি নির্ভর খরচ |
দুবাই (UAE) | ওয়ার্ক ভিসা | ৩.৫-৫ লক্ষ টাকা | ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে |
মালয়েশিয়া | ওয়ার্ক ভিসা | ৩.৫-৫ লক্ষ টাকা | |
থাইল্যান্ড | ট্যুরিস্ট | ২০০০ টাকা (অন-অ্যারাইভাল) | ১৫ দিনের জন্য |
চীন | ভিজিট | ৪০০০-৫০০০ টাকা | |
ভারত | ট্যুরিস্ট | ৮০০-১২০০ টাকা | অনলাইন আবেদন |
বাংলাদেশের ভিসার দাম কত
বাংলাদেশে ভিসার দাম নির্ধারণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যার তালিকা বিভিন্ন দেশে থাকা মিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস অনুযায়ী:
- একক প্রবেশ ভিসা – CHF 40 (≈ ৫,০০০ টাকা)
- দ্বৈত/মাল্টিপল ভিসা – CHF 80 (≈ ১০,০০০ টাকা)
বাংলাদেশের ভিসা ফি (সুইজারল্যান্ড মিশন ভিত্তিক)
ভিসার ধরন | ফি (CHF) | টাকা (প্রায়) |
---|---|---|
একক প্রবেশ | ৪০ | ৫,০০০ টাকা |
দ্বৈত বা একাধিক প্রবেশ | ৮০ | ১০,০০০ টাকা |
৪৮ ভিসা ফ্রি কান্ট্রিস ফর বাংলাদেশ
২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ৪৮টি দেশে ভিসা ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- এশিয়ার দেশ: মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলংকা (ETA), ইন্দোনেশিয়া
- আফ্রিকার দেশ: গাম্বিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া (অন-অ্যারাইভাল)
- ওশেনিয়া: ফিজি, কুক আইল্যান্ডস
- ক্যারিবীয়: ডমিনিকা, গ্রেনাডা ইত্যাদি
বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ফ্রি / অন-অ্যারাইভাল দেশসমূহ (সাম্প্রতিক তালিকা)
অঞ্চল | দেশসমূহ |
---|---|
এশিয়া | মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা (ETA) |
আফ্রিকা | গাম্বিয়া, কেনিয়া (VOA), উগান্ডা (VOA) |
ওশেনিয়া | ফিজি, সামোয়া, টুভালু, ভানুয়াতু |
ক্যারিবীয় | ডমিনিকা, হাইতি, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস |
থাইল্যান্ড ভিসা খরচ: কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
১. থাইল্যান্ডের ভিসা ফি কত?
– অন-অ্যারাইভাল ভিসা ১৫ দিনের জন্য ২০০০ টাকা (থাই বাথ ২০০০)।
২. থাইল্যান্ডে কি ভিসা ফ্রি যাওয়া যায়?
– নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু সময়ের জন্য ভিসা ফ্রি সুবিধা দেয়, তবে এটি সাধারণত প্রোমোশনাল।
৩. থাইল্যান্ডের ট্যুরিস্ট ভিসা কত দিনের জন্য পাওয়া যায়?
– সাধারণত ১৫ দিন অন-অ্যারাইভাল, এবং অ্যাম্বাসির মাধ্যমে ৩০ দিনের জন্য ভিসা পাওয়া যায়।
৪. থাইল্যান্ড ভিসা করতে কত সময় লাগে?
– আবেদন জমা দেওয়ার ৫-৭ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা হাতে পাওয়া যায়।
৫. থাইল্যান্ড ভিসার জন্য কি কি লাগে?
– পাসপোর্ট, ছবি, টিকিট, হোটেল বুকিং, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও ফি।
শেষকথা।
বর্তমান বিশ্বে বিদেশ ভ্রমণ বা কাজের জন্য প্রস্তুত হতে হলে আগে জানতে হবে কোন দেশের ভিসার দাম কত। সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতি ছাড়া আবেদন করলে ভিসা না পাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
২০২৫ সালে ভিসা করতে কত টাকা লাগে, সেটা নির্ভর করছে আপনি কোন দেশে যাচ্ছেন, কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন এবং কী ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করছেন তার উপর। তাই, যেকোনো বিদেশযাত্রার আগে সঠিক ও হালনাগাদ তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরি।